নবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)। মানবজাতিকে সঠিক পথ ও মুক্তির দিশা দেয়ার জন্য আল্লাহতায়ালা তাঁকে দুনিয়াতে পাঠান। আল্লাহ বলেন, হে নবী! আমি আপনাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শকরূপে। আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহ্বানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপ হিসেবে। (সূরা আহযাব ৪৫-৪৬)।
মানবজাতির আদর্শ হজরত মুহাম্মদ (সা.)। দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পরকালে মুক্তির জন্য তিনি জীবন ভর মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বান করেছেন। হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে শ্রেণিবৈষম্যকে অতিক্রম করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্বসুলভ মনোভাব জাগ্রত করেছেন। আকাবার শপথ, মদিনা সনদ ও হুদায়বিয়ার সন্ধি এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
সিরাত বা মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী পাঠ করলে মানবতার কল্যাণে তার মহৎকর্ম ও কৃতিত্ব বোঝা যায়।
আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা পেতে হলে তাঁর রাসূলকে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস আমাকে অনুসরণ কর। আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন। (সূরা আলে ইমরান-৩১)।
রাসূলকে অনুসরণ করতে হলে তাকে জানতে হবে। তাকে চিনতে হবে। রাসূলকে জানার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে তার জীবনী পাঠ করা। জীবন গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে রাসূল (সা.)-এর পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়। কোন অবস্থায় রাসূল কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, কখন ধৈর্য ধারণ করেছেন, কোন পরিস্থিতিতে রাসূল (সা.) শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছেন তা অতি সহজে জানা যায়। ইসলামের সব বিধানের বাস্তব ও প্রায়োগিক চিত্র মহানবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবন। তাই রাসূল (সা.)-এর জীবনী পাঠের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাছাড়া তার জীবনী পাঠ না করলে রাসূল (সা.)-এর আদর্শ ও জীবনাদর্শন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে না।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে ভালোবাসা মুমিন হওয়ার অন্যতম শর্ত। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ছাড়া কেউ মুমিন হতে পারে না। রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা, তার সন্তানাদি এবং সব মানুষ থেকে বেশি প্রিয় না হব। (বুখারি-১৬)।
রাসূলের প্রতি মহব্বত ও শ্রদ্ধা প্রগাঢ় করার জন্য প্রয়োজন তাকে জানা, কেমন ছিলেন তিনি এ সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান রাখা। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। তাহলে জানা যাবে মানুষের কল্যাণের জন্য তার ত্যাগ তিতিক্ষার কথা। ফলে মানবিক চেতনা জাগ্রত হবে।
কত গল্প, কত উপন্যাস, কত কবিতা-ই না আমরা পড়ি। কেবল পড়া হয় না, জানা হয় না মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে। কথার ফাঁকে ফাঁকে গল্পের বাঁকে বাঁকে বলে ফেলি সক্রেটিস এই বলেছেন, শেক্সপিয়ার এটা লিখেছেন। কিন্তু বলতে পারি না প্রিয় নবী কী করেছেন কিংবা কী বলেছেন। হৃদয়ে ভাসে না তার জীবনের ঘটনাবলী, মানবতার কল্যাণে সম্পাদিত তাঁর কার্যাবলী। তাঁকে ভালো না বাসলে ভালো কাজের প্রতি মহব্বত আসবে কী করে!
Reviews
There are no reviews yet.